মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কাল ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু, যা বলছে প্রধান দুই দল ঢাকা মহানগর পুলিশের এক সহকারী কমিশনার বদলি বিএসএফের পোশাকে সীমান্তে মাদকের কারবার করতেন রেন্টু কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ ভারতে চতুর্থ দফা লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ ও কাশ্মিরে কেমন ভোট হলো বিভাজন থেকে বেরিয়ে এসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা উচিত : মির্জা ফখরুল মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে কনডেম সেলে রাখা বেআইনি : হাইকোর্ট আমার পুরো ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল : মনোজ মানবদেহে প্রথম ব্রেইনচিপ ইমপ্লান্টে ধাক্কা খেলো নিউরালিংক ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ অধ্যাপক গ্রেপ্তার
সাত বছরে চসিক দখল করতে পেরেছে মাত্র ৭৬০ মিটার খাল

সাত বছরে চসিক দখল করতে পেরেছে মাত্র ৭৬০ মিটার খাল

স্বদেশ ডেস্ক:

সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম নগরীর বারইপাড়া থেকে নুর নগর হাউজিং সোসাইটি হয়ে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ একটি খাল খননের উদ্যোগ নেন। ২০১৪ সালে ওই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২৬ কোটি টাকা। একবার বাজেট সংশোধন এবং আরেকবার প্রকল্পের সময় বাড়িয়ে ওই ব্যয় এসে ঠেকেছে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকায়। অর্থাৎ সাত বছরে এই প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে প্রায় সোয়া চারগুণ। কিন্তু ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খাল খননের জন্য সাত বছরের চেষ্টায় সবেমাত্র ৭৬০ মিটার জায়গার দখল পেয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।

খাল খননের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদার মো. শাহজাহান আমাদের সময়কে বলেন, আটদিন আগে কাজ শুরু করলেও এগুতে পারছি না। স্থানীয় লোকজন পদে পদে বাধা দিচ্ছে।

জানা যায়, চসিক ভূমির দখল পেলেও ভূমির মালিকরা দাবি করেন তারা টাকা পাননি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর খননযন্ত্রের চাবি নিয়ে যান ভূমির এক মালিক। পরে চসিকের দুই জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী বিষয়টি মীমাংসা করেন।

দুই মেয়রের মেয়াদ শেষে তৃতীয় জনের হাতে খাল খননের দায়িত্ব এসে পড়লেও ২০২৪ সালের জুনে খালটির খননকাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান চসিকের প্রকৌশল বিভাগ। এর কারণ হলো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় খালটি খনন করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী এডিপির যে কোনো উন্নয়ন কাজে মোট ব্যয়ের ৮০ শতাংশ সরকার দেয়। অবশিষ্ট ২০ শতাংশ পরিশোধ করতে হয় চসিককে, যা ম্যাচিং ফান্ড নামে পরিচিত। ইতোমধ্যে এ ধরনের দেনার পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা

ছাড়িয়ে গেলেও চসিক তা পরিশোধ করতে পারছে না। চসিকের অভ্যন্তরীণ খাতের সব আয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, ভবিষ্য তহবিলসহ নানা খাতে ব্যয় হয়ে যায়। খাল খননের প্রকল্পে চসিককে নিজস্ব তহবিল থেকে ২৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু ঠিকাদাররা জানেন, সেই সামর্থ্য চসিকের নেই।

চসিকের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী আমাদের সময়কে বলেন, আমরা মন্ত্রণালয়ের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি। এ মুহূর্তে আমাদের হাতে অত টাকা নেই যা দিয়ে ম্যাচিং ফান্ড চালানো সম্ভব। আশা করি আগামীতে এডিপির সকল প্রকল্পে শতভাগ অর্থ সরকার থেকে পাব। খাল খননের প্রকল্পেও এর প্রতিফলন ঘটবে বলে আশা করি। সেই বিশ্বাস থেকে খাল খননের কাজও শুরু করে দিয়েছি।

চট্টগ্রাম শহরের একটি বড় অংশ পাহাড়ি ভূমি। ভারী বর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি ভূমির একটি অংশের পানি চশমা খাল দিয়ে চাক্তাই খালের একাংশে গিয়ে পড়ে। কিন্তু পানি অপসারিত না হওয়ায় নগরীর বহদ্দারহাট থেকে ষোলশহর পর্যন্ত দ্রুত পানিতে ডুবে যায়। চলতি বছরের ভারী বর্ষণের সময় পানিতে পড়ে এক ব্যবসায়ী ভেসে যান, যার লাশ আর পাওয়া যায়নি। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, নতুন খালটি খনন হলে এই জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই থাকবে না।

চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী ও খাল খনন প্রকল্পের পরিচালক মো. ফরহাদুল আলম আমাদের সময়কে বলেন, ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি খননের জন্য আমাদের ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এজন্য ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনকে ৯১০ কোটি টাকা বুঝিয়ে দিয়েছি। তার বিপরীতে জেলা প্রশাসন আমাদের প্রথম পর্যায়ে চলতি মাসে ৬ দশমিক ৯৫ একর জমি বুঝিয়ে দিয়েছে। এই পরিমাণ জমির দৈর্ঘ্য ৭৬০ মিটার। এজন্য ২৫৪ কোটি টাকা সমন্বয় করা হয়েছে। তিনি বলেন, খাল খনন, দুই পাশে রাস্তা নির্মাণ, খালের দুই পাশের প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ ও ৯টি সেতু নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের বাকি ১১৬০ কোটি টাকাই খরচ হয়ে যাবে ভূমি অধিগ্রহণ করতে। খালটি হবে ৬৫ ফুট প্রস্থ। দুই পাশে ২০ ফুট প্রশস্ত দুইটি সড়ক আর ছয় ফুট করে দুইটি ফুটপাত থাকবে।

এদিকে খালটি মোহরার যে ভূমি দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়বে, সেখানে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) আরেকটি প্রকল্প আছে। আউটার রিং রোড প্রকল্পের আওতায় চসিকের এই খালের মুখে একটি সøুইস গেইট সিডিএ নির্মাণ করার কথা রয়েছে। কিন্তু সিডিএ ভূমি অধিগ্রহণ না করেই সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করে দেওয়ায় স্থানীয় ভূমির মালিকরা তাতে বাধা দিয়েছে। তা ছাড়া চট্টগ্রাম শহরের পানি অপসারণ সংক্রান্ত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সিডিএ’র অন্য প্রকল্পগুলো আর্থিক সংকটে পড়েছে। তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু থেকে কালুরঘাট রেলসেতু পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন এই আউটার রিং রোড প্রকল্পটিও আর্থিক সংকটের মুখে। ফলে খালের মুখে শেষ পর্যন্ত সøুইস গেইট নির্মাণ করা হবে কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877